শফিকুল ইসলাম খোকন

রবিবার, ৯ জুন, ২০১৯

জনগণের পে-স্কেল কোথায়?

:: শফিকুল ইসলাম খোকন ::

আমাদের দেশটিকে বলা হয়ে থাকে গণতান্ত্রিক দেশ; ১৯৭১ সনে পাকিস্তানিদের হাত থেকে অনেক প্রাণের বিনিময় এ দেশ স¦াধীন করা হয়েছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আর গণতন্ত্রের মুল পুঁজি হিসেবে ধরা হয়ে থাকে জনগণকে; আমাদের রাজনীতিবিদরা সব সময়ই মুখে খৈ ফুটিয়ে বলে থাকেন-‘জনগণই মুল চাবিকাঠি, জনগণই গণতন্ত্রের মুল, জনগণ ছাড়া দেশ অচল, জনগণ ছাড়া সরকার অচল, জনগণই মতার উৎস্য ইত্যাদি’।

গত কয়েকদিন ধরে নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। নতুন করে কোন লেখা ধরতে পারিনি। ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ততা থাকাকালীন হঠাৎ শুনলাম সরকারি কর্মকর্তাদের পে-স্কেলের ঘোষনা। প্রথমে শুনে খুব ভালোই লাগগো। ভালো লাগারই কথা। কারণ বেতন বৃদ্ধি এবং সকল সুযোগ-সুবিধা কেনা চায়? আমিও চাই। কিন্তু আমার চাওটা একটু আলাদা...। আমি চাই একটি বৃহত স¦ার্থের জন্য ুদ্র স¦ার্থ ত্যাগ করা যায় তাতে তি কি? যদিও এ কথাটির সাথে অনেকেই একমত পোষন করবেন না।

সম্প্রতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশের প্রায় ২১ লাখ সরকারি কর্মকর্তাদের পে-স্কেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ সিদ্ধান্তের পরে বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তাদের প থেকে সরকারকে অভিনন্দন আর ধন্যবাদের জয়জয়কার; হ্যাঁ ধন্যবাদ দেয়াটা তাদের বেলায় সঠিক এবং সরকারও ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে সম্মান করি এবং ব্যক্তিগত দিক দেখে তার প্রশংসা করি। প্রশংসার পাশাপাশি গঠণমূলক সমালোচনাও করে থাকি।

আমাদের দেশে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ। এ ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ২১ লাখ (গণমাধ্যমের তথ্যমতে) সরকারি কর্মকর্তা। এখন দেখা যাক, ২১ লাখ বাদে বাকি মানুষ কারা? এরা আমাদের মতো সাধারণ কৃষক, মৎস্যজীবী, কাঠুরি, দিনমজুর, উৎপাদক, শ্রমিক। এরা দেশের মেরুদণ্ড। যদি রাজনীতিকদের ভাষায় বলি তাহলে ‘জনণই মতার উৎস’। তাহলে জনগণের কথা কতটুকু ভেবেছেন? আমরা কর প্রদান করি দেশের সুষম উন্নয়নের জন্য। জনগণের টাকা যতটা সম্ভব উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা উচিত। তাহলে সাধারণ মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা গুটি কয়েক মানুষের আরামদায়ক জীবনের জন্য কেন ব্যয় করা হবে? ওইসকল সাধারণ নাগরিকদের জন্যতো বিশেষ বিবেচনায় কর মওকুফ করা হয় না? এদেরতো পে-স্কেলও হবে না, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতাও পাবে না। বরং তাদের খরচ বাড়বে। এদের কোনো আর্থিক নিরাপত্তা না থাকার কারণে কী করে দিন অতিবাহিত করবে, তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন।

এখন যদি এই পে-স্কেল বা বর্তমান বাজার নিয়ে বিশ্লেষন করি তাহলে তা থেকে আমরা কি পাই। তাহলে আসুন একটু বিশ্লেষন করে দেখি। মনে করেন কাঁচা বাজারে গিয়ে একজন দিনমজুর বা খেটে খাওয়া মানুষ একটি লাউ কিনলেন ৪০ টাকা দিয়ে। ওই লাউটি যদি ৮০ থেকে ১০০ টাকা মুল্য হয় তাহলে পে-স্কেল প্রাপ্তদের কিনতে মোটেই কষ্ট হবে না। কিন্তু ওইসকল খেটে খাওয়া মানুষদের ৪০ টাকায় কিনতেই হিমশিম খেতে হয়। পে-স্কেল প্রাপ্তদের বেতন ভাতা বাড়লেও অন্য সাধারণ মানুষদের আয় বাড়লো না। তাহলে ২১ লাখ মানুষের জন্য বাকী পৌনে ১৬ কোটি মানুষদের গলার কাঁটা হলো না? এটি কতটুকু যৌক্তিক বলে মনে করবেন দেশের ধারক-বাহকেরা!

যদি মনে করি বেতন বৃদ্ধির প্রধান কারণ সরকারি চাকরিজীবীদের নিরাপদে জীবন-যাপনের জন্য। এটি ভালো কথা। আমরা যারা চাকুরীজীবী আছি তারাও চাই এবং যারা চাকুরীজীবী তারা আমাদের কোন না কোনভাবে আত্মীয়। তাহলে এ সুযোগ-সুবিধা আমাদের আত্মীয়রাই ভোগ করবেন। যদি খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন, সর্বোচ্চ বেতন আর সর্বনিম্ন বেতনের পার্থক্যটা কত বেশি। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতনের পার্থক্য এত বেশি তাতে খুব সহজেই বোঝা যায় দেশের বাকি পৌনে ১৬ কোটি মানুষদের  প্রতি বৈষম্য মাত্রা আকাশ-পাতাল। এ থেকেই বোঝা যায় নিম্ন আয়ের মানুষের কথা ভেবে এ বেতন কাঠামো নির্ধারিত হয়নি। একবারের জন্যও ভাবলেন না যে, নতুন কাঠামোর বাস্তবায়নে আগের ব্যয়ের সঙ্গে আরো কত টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। যা জনগণের রক্ত পানি করা রাজস্ব থেকে তাদেরকে বেতন ভাতা দেওয়া হবে। সরকারের এমন কোনো স্থান নেই, যে স্থান থেকে কোনো না কোনোভাবে বছরে দু'একশ কোটি টাকা আয় হয়। আদমজী জুট মিল তাও বন্ধ; এরপর সম্ভাবনার যতোটুকু স্থান ছিল; তাও এবার জিএসপি বাতিলের মধ্য দিয়ে অন্ধকারে পতিত হয়েছে। আমি যদি আরও গভীরে চিন্তা করি তাহলে বুঝা সহজ হবে। মুষ্টিমেয়দের যে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে তারাওতো জনগণ? তারা জনগণের বাইরে নয়। এ জনগণ ৫ বছর পরপর ভোটাধিকার প্রয়োগেও ব্যর্থ হয়, কারণ তাদের ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করতে হয়। আর যাদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়, রাজনৈতিক দল সরকার গঠন করে আজ তাদেরই মাথায় বাড়ি। তাহলে এ থেকে কি বুঝা গেল এটি কোন কালো হাতের ছোয়া নাকি কোন অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য?

পরিশেষে বলতে চাই- অষ্টম পে-স্কেল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে স্বস্তি আনলেও; তাদের ও সমাজের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেললেও সরকারের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। পে-স্কেল হওয়ার পর কেউ কেউ অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে অতীতে যারা ভালো ছিলেন; তারাই ভালো থাকবেন। নির্মম বাস্তবতার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ আর বেকারত্বের অভিশাপে সাধারণ জনগণ। সরকারের উদ্দেশ্যে বলি-আপনারা যদি জনগণের সরকারই হন, রাজনীতি যদি জনগণের জন্যই করেন তাহলে জনগণের কথা ভাবেন; শুধু শুধু মুখে বলে আর গলাবাজি করবেন না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গুটি কয়েক মানুষের জন্য ভাবেনি; ভেবেছিলেন সাড়ে ৭ কোটি মানুষের জন্য। তাই আসুন আমরা বঙ্গবন্ধু আদর্শে আদর্শিত হয়ে, তার মতো হিংসাবিদ্দেশের উর্দ্ধে থেকে রাজনীতি ও দেশ পরিচালনা করি। তা নাহলে একদিন জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। জনগণকে ভালোবাসতে শিখুন, কথার সাথে কাজের মিল রাখুন। বৃহৎ স¦ার্থের জন্য ুদ্র স¦ার্থ জলাঞ্জলি দিতে শিখুন।

লেখক: সাংবাদিক, কলামিষ্ট ও  গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ে গবেষক

প্রকাশিতঃ দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ, তারিখঃ ৩ অক্টোবর ২০১৫, দৈনিক যুগান্তর ৩০সেপ্টে¤¦র ২০১৫, দৈনিক জনতা, ১২ অক্টোবর ২০১৫, দৈনিক বাংলাদেশ সময়, ৩ অক্টোবর ২০১৫

সাভার ট্র্যাজেডি এবং হেফাজতের মতিঝিল

:: শফিকুল ইসলাম খোকন ::

গত ৫ মে দৈনিক আমাদের অর্থনীতিতে একটি কলাম লিখেছিলাম। শিরোনাম ছিল ‘স্বস্তির রাজনীতি : ঐকমত্যের দেশপ্রেম’। সাভার ট্র্যাজেডির দিন থেকে সরকারি দল এবং বিরোধী দলের মধ্যে যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাতে এক রকমের রাজনীতিতে স্বস্তির হাওয়া বইতে শুরু করছিল। একে অপরের প্রতি যে সহানুভূতি বিরাজ করছিল তাতে মনে হয়েছিল রাজনীতিতে ছোটখাটো ছাড়া হয়তো পূর্বের ন্যায় সহিংস ঘটনা আর ঘটবে না। এ কারণেই ওই লেখাটি লিখেছিলাম। লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পর আমার বন্ধুমহল থেকে শুরু করে অনেক শুভাকাক্সক্ষী লেখাটি পড়ে অনেক প্রশংসা করেছিলেন এবং ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপ আর বিরোধী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চায়ের দাওয়াত’ আমাদের গোটা জাতিকে একটি নতুন মেরুকরণের দিকে নিতে শুরু করেছিল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর বেগম খালেদা জিয়া সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম বেঁধে দেয়। তাতে আবার নতুন করে রাজনীতিতে সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি শুরু হয়ে যায়। এর পরদিন ৫ মে হেফাজতে ইসলাম ঢাকার মতিঝিলে অবরোধের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে বিশাল জনস্রোত দেখিয়ে দেয়। তাতে হয়ে গেল নজিরবিহীন ঘটনা।

প্রতিনিয়তই চলছে ঘটনা, দুর্ঘটনা অথবা ট্র্যাজেডি; যে নামেই বলি না কেন। একে একে ঘটনা দুর্ঘটনা এবং ট্র্যাজেডিতে কান্তি এসেছে মানুষের মাঝে। কান্তি মানসিকতা নিয়ে আর যেন কোনো কিছুই পারছে না মানুষ। একটি ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি ঘটনা। এসব ঘটনা দুর্ঘটনা চেপে ধরেছে আমাদের গোটা জাতিকে। একটি ঘটনা শুরু হলে আর এক ঘটনায় চাপা পড়ে যায়। ইতিপূর্বে দেখে আসছি শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প, গ্রামীণ ব্যাংক, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনিসংকেত, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, জাতীয় সংসদ ও বিচারবিভাগের মধ্যে নতুন করে সৃষ্ট বিতর্ক, খুন, গুম, অপহরণ, দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় অস্থিরতা, পিলখানা ট্রাজেডি, বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু, তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ড, শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ, কক্সবাজারে কয়েকশ গাড়িতে আগুন দিয়ে পোড়ানো, সাভার ট্র্যাজেডি সব শেষে হেফাজতের অবরোধ। এসকল ইস্যুগুলো সামাল দিতে সরকারকে বর্তমানে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। সরকারের শেষ বছরে এসে এতগুলো ইস্যু সামাল দিতে সরকারের হিমশিম খেতে হচ্ছে। হেফাজতের গত মাসের লংমার্চ তেমন কোনো সহিংসতা ছাড়া বেশ ভালোভাবেই কাটিয়েছিল। কিন্তু ৫ মে যে ঘটনা ঘটে গেল তা নজিরবিহীন। যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ বা প্রচার করেছে। 

একটি গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন-সংগ্রাম, সংকট হতেই পারে। আবার তা যে নিরসন হবে না এমনটিও নয়। কিন্তু ‘দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, রাজনৈতিক নেতাদের কপটতা, ক্ষমতার লোভ ও ব্যক্তিস্বার্থের কারণে দেশটি ক্রমে অন্ধকারের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দেশবিরোধী অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। যা কখনো, কোনো পক্ষের জন্যই শুভ হতে পারে না। শুভ হতে পারে না দেশ ও জনগণের জন্যও। এদেশে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটলে সৃষ্ট জনরোষ থেকে রাজনৈতিক নেতারাও রেহাই পাবেন না। 

২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া সাভার ট্র্যাজেডির শোক এখনো মুছে যায়নি। মুছে যায়নি স্বজনহারার ক্ষত। প্রতিনিয়ত কম-বেশি সাভারের রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে শ্রমিকদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে গলিত অথবা বিকৃত। কেউ কেউ বলছে সাভার ট্র্যাজেডি একটি নিছক দুর্ঘটনা। এটি তেমন কোনো বড় দুর্ঘটনা নয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাভার ট্রাজেডি নিয়ে বলেছিলেন ‘নট রিয়েলি সিরিয়াস’। তার মতে সাভার ট্রাজেডি মারাÍক কিছু নয়। এটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা। (সূত্র : দৈনিক আমাদের অর্থনীতি, ৫ মে ২০১৩)। বড় আফসোস লাগে, এতগুলো শ্রমিকের প্রাণহানি হল, কিন্তু আমাদের (ওইরকম রাজনীতিবিদদের) মনে এতটুকুও নাড়া দেয়নি। সাভার ট্র্যাজেডির ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম, হেফাজত ইসলামের অবরোধ আর সরকারদলীয় কিছু নেতা-মন্ত্রীর উস্কানিমূলক কথা, নতুন করে সংঘাত শুরু হয়ে গেল। এই ক্রান্তিলগ্নে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম, বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল এবং হেফাজতের অবরোধ মানবিক কারণে বিরত থাকা উচিত ছিল। কিন্তু ৫ মে হেফাজতের অবরোধকে কেন্দ্র করে দিনের বেলা যা ঘটে গেল তা অন্যান্য রাজনীতিবিদদের দ্বারাও ঘটেছিল, কিন্তু কোরআন শরিফে আগুনÑ এটি দুঃখজনক এবং ক্ষমার অযোগ্য। এ ঘটনা হেফাজত করুক আর সরকারদলীয় ক্যাডার অথবা অন্য কোনো দলের ক্যাডার ছদ্মবেশী হয়ে ঢুকে করুকÑ এটি ক্ষমার অযোগ্য, ওদের ক্ষমা নেই, ক্ষমা নেই।

ওইদিন রাতে যা ঘটে গেল তা নজিরবিহীন ঘটনা। র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয় যৌথ অভিযানে যা ঘটে গেল তা আমরা সবাই অবগত। ওইদিন রাত ১১টার দিকে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর’র পর্দায় লাইভ শোতে টিভির স্টুডিওতে দর্শকদের উদ্দেশে এক সাংবাদিক বলেছিলেন ‘কিছুক্ষণ আগে একটি ম্যাসেজ এলো আমাদের এখান থেকে সরে যেতে হবে। কারণে তিনি উত্তর দিলেন আমাদের (সাংবাদিকদের) নিরাপত্তা নেই।’ এরপর রাত ২টার দিকে যৌথবাহিনী শাপলা চত্বরে নৃশংস হামলা চালায়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা শাপলা চত্বরের ঘটনাটি ২৫ মার্চ কালরাতের চেয়ে কম নয়। শাপলা চত্বর থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেয়া স্বাধীন গণমাধ্যমগুলোর কণ্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এটি স্বাধীন দেশের স্বাধীনচেতাদের কাছ থেকে অবশ্যই কাম্য ছিল না। 

এদিকে হেফাজতে ইসলামের সমর্থক ও প্রতিবাদকারীদের উপর হামলাকে ‘প্রতিবাদকারীদের গণহত্যা’ বলে নিন্দা জানিয়েছে এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন। ‘বিবৃতিতে বলা হয়, ৬ মে ভোর ৩টায় প্রতিবাদকারীদের উপর সিরিজ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বলা হয়, প্রতিবাদকারীদের উপর হামলায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনই বলা সম্ভব নয়। দেশটির বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। কিছু কিছু ইন্টারনেটের খবরে নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ৫০০ বা এর বেশি বলা হয়েছে। ইন্টারনেটে নিহতদের লাশের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। তবে দেশের প্রধান সংবাদ মাধ্যমগুলো হতাহতের বিষয়ে নিশ্চুপ রয়েছে। প্রতিবাদকারীদের উপর হামলার দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচারকারী দুটি চ্যানেল তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন (এএইচআরসি) জানতে পেরেছে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সোমবার সকাল থেকে হেফাজতে ইসলামের প্রতিবাদকারীদের উপর বিভিন্ন স্থানে কঠোরভাবে চড়াও হয়েছে। গণহারে ধড়পাকড় করছে।’ (সূত্র : আমাদেরসময়ডটকম, ৭ মে ২০১৩)। এই নজিরবিহীন ঘটনা আমাদের দেশের মিডিয়া কিছুটা এড়িয়ে গিয়েছে এটি দুঃখজনক। তবে ধিক্কার জানাই সরকারের প্রতি এসব ঘটনা প্রচার করার অপরাধে সংশিষ্ট গণমাধ্যগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করার জন্য। পদে পদে সরকার গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে। 

হেফাজতের দাবি মতে, হেফাজত কোনো রাজনৈতিক দল নয়। একটি সামাজিক সংগঠন। আর একটি সামাজিক সংগঠন স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত যেকোনো দাবি উত্থাপন করতেই পারে। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে নবী (সা.)-কে অবমাননা বগারদের শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। হেফাজতে ইসলামের প্রতিবাদকারীদের দাবি, সরকার নাস্তিকদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। এসব বিষয়ের প্রতিবাদে ও বাসফেমি আইনের দাবিতে ১৩ দফা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে হেফাজতে ইসলাম। সেসব দাবির পক্ষে ঢাকায় অবরোধ ও সমাবেশ করতে গেলে এমন ন্যক্কারজনক হামলার শিকার হন তারা। হেফাজত ইসলামের অবরোধকে কেন্দ্র করে জ্বালাও-পোড়াও থেকে শুরু করে সহিংস ঘটনা ঘটেছে তা সত্যিকার অর্থে কাম্য নয়। আর অবরোধের দিন রাতে যে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে গেলে সেটিও কাম্য নয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে। তাদের মতে শাপলা চত্বরে নিষ্ঠুর ও অমানবিকভাবে হামলা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এমন সব অস্ত্র ব্যবহার করেছে যা সাধারণত সম্মুখ যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। বার্তাসংস্থা এএফপি বলছেÑ চার দশক আগে স্বাধীনতার পর এটাই বাংলাদেশে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা। সিএনএন জানিয়েছে, এতে ঠিক কতজন নিহত হয়েছে, তা সম্ভবত কখনো জানা যাবে না।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশ ব্যাপক সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ভেবে জনমনে উৎকণ্ঠা বিরাজ করা অস্বাভাবিক নয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রশ্নে রাজনৈতিক সংকট দূর হয়নি এখনো। আমরা লক্ষ করেছি, সরকার রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও বিএনপি শর্তারোপ করে সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। অপরদিকে সরকার পতনের আন্দোলনে কর্মী-সমর্থকদের হেফাজতের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। এসব বিবেচনায় বিএনপির এ নীতি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে জিইয়ে রাখার প্রবণতা বলে মনে করারও যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সুতরাং উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার আগেই উভয় রাজনৈতিক দলকে দ্রুত ঐকমত্যে পৌঁছতে হবে। সহিংস সংঘাতের রাজনীতি বাদ দিয়ে সমঝোতার দিকে এগিয়ে আসুন। দেশবিরোধী যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নিন।

লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট, গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ে গবেষক] 

সুবীর নন্দীর বিদায় : দিন শেষ হলো কথা রয়ে গেল!

সুবীর নন্দীর বিদায় : দিন শেষ হলো কথা রয়ে গেল!


শফিকুল ইসলাম খোকন
দিন আসে, দিন যায়, কথা থেকে যায়। হয়তো সুবীর নন্দী ভেবেছিলেন তিনিও একদিন থাকবেন না, তার কথাগুলো রয়ে যাবে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করার সময় ‘দিন যায় কথা থাকে’ সিনেমায় গানটি গেয়েছিলেন সুবীর নন্দী। প্রায় পাঁচ দশক এভাবে প্রতিদিনই কেটে গেছে, গানের সুরে কথা গেঁথেছেন তিনি। ৬ মে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সুবীর নন্দী ইহলোকের মায়া ছেড়ে চলে গেছেন। এ দিনটির মধ্য দিয়ে ইহকালের দিন শেষ; কিন্তু রেখে গেছেন তার সুরের জালে গাঁথা সেসব ‘কথা’। গুণিজন বিদায়ের তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি নাম সুবীর নন্দী।
সব ধর্মের মানুষই বিশ্বাস করেন ‘জন্ম একবার মৃত্যুও একবার’। এরই ধারাবাহিকতায় প্রত্যেক প্রাণীকেই চিরায়ত ঘুমের সকাশে যাত্রা করতে হয়, এটা অবশ্যম্ভাবী। হাজার ডাকেও অনন্তরে পা রাখা সেই ঘুমকাতুরের জাগরণ হয় না। প্রেমাস্পদ জীবিত প্রাণের সঙ্গে অশেষ মাখামাখিতেও আর ঘুচে না বিচ্ছেদের বিয়োগ ব্যথা। শিল্পী সুবীর নন্দীর নিজের গান দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছিলেনÑ দিন যায়, কথা থাকে। মৃত্যুর মতো মানুষ ঘুমিয়ে পড়লে, ডাকাডাকিতেও সাড়া মিলবে না। তার দিন শেষ হয়ে গেছে; কিন্তু তার কথা আর অসংখ্য গান রয়ে গেছে। আমাদের হৃদয় বিদীর্ণ করে দিয়ে শিল্পী নিজেই উড়াল পঙ্খি হয়ে উড়াল দিয়ে চলে গেলেন। স্মরণের আলোয় যাকে আমরা ডেকে ফিরব; কিন্তু তিনি আর সাড়া দেবেন না। আর অশিক্ষিতের মতো বলবেন না ‘ও মাস্টার সাব আমি দস্তখত শিখতে চাই।’
উত্তর-পূর্ব বাংলার উড়াল পঙ্খির দেশের তিনি ছিলেন গানের একটি ‘ও আমার উড়াল পঙ্খি’। হিজলে তমালে ছাওয়া আদি অন্তহীন হাওরের বুক থেকে গান নিয়ে তিনি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সারা বাংলায়। জল ছলছল লিলুয়া বাতাসে ভেসে সেই অপরূপ গানে গানে স্পর্শ করেছিলেন সমগ্র বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাভাষী মানুষদের। মরমি গানের ‘ও আমার উড়াল পঙ্খি’ সুবীর নন্দী এখন চলে গেছেন অধরা জগতের দূর নীলিমায়। সুবীর নন্দী সবার মাঝে গান নিয়ে সবসময় উড়াল পঙ্খি ছিলেন; কিন্তু দূর নীলিমায় গিয়ে তার দুটি আঁখিও নীরব রয়েছে।
সুবীর নন্দীর মতো গায়ককে নিয়ে লেখা অনেক লেখকেরই যোগ্যতা আছে। কিন্তু আমার মনে হয়, আমার মতো লেখকের তাকে নিয়ে লেখা যোগ্যতা আছে বলে হয় না। তবে তাকে নিয়ে লেখাটা আমার সৌভাগ্যের ব্যাপার। তার গানগুলো আমাকে ভাবিয়ে তোলে। তার গানে আমি মুগ্ধ। তিনি মানুষকে গানের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন ইহকাল আর পরকাল। কলাজ্ঞ শ্রোতার শ্রবণ কুহরে বাংলা সংগীতের যে বর্ণিল তরঙ্গ ধ্বনি দিয়ে গেলেন সুবীর নন্দী, তার প্রাপ্তিতেই স্বস্তি ও আনন্দ খুঁজব আমরা। বাংলার আত্মা থেকে আহরিত গানকে করেছিলেন তিনি জীবনের ধ্রুবতারা। কথা ও সুরের সঙ্গে একাকার হয়ে মিশে যেতেন বেদনার প্রহরে প্রহরে। তার গান শুধু গান মাত্র ছিল না, ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া রাশি রাশি বেদনার পুঞ্জীভূত মেঘমালা। বাংলা গানের সহস্র বছরের সাধনায় সুবীর নন্দী প্রশান্তির বারি বর্ষণ করে যাক। আধুনিক ও যান্ত্রিক জীবনে আত্মা ও মননের বেদনার কথা মানুষ যখন ভুলেই যাচ্ছিলেন, তখন তিনি গেয়েছিলেন মর্মবেদনার গান। আত্মার হাহাকার হয়ে উচ্চারণ করেছিলেন মানুষের প্রেম ও বিরহের অপরূপ কথামালাÑ ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’।
সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব কেটেছে চা বাগানে। পরিণত বয়সে গানের পাশাপাশি চাকরি করেন ব্যাংকে। প্রাইমারিতে পড়ার সময় মা পুতুল রানীর কাছে সংগীতের হাতেখড়ির পর ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন সুবীর নন্দী। সিলেট বেতারে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে। রেডিওতে তার প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। ১৯৭৬ সালে আবদুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্লেব্যাকে আসেন সুবীর নন্দী। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমান ‘অশিক্ষিত’। সেই সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিন আর সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। ধীরে ধীরে তার কণ্ঠের রোমান্টিক আধুনিক গান ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘আশা ছিল মনে মনে’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়া’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘একটা ছিল সোনার কইন্যা’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খিরে’ গানগুলো সুবীর নন্দীকে পৌঁছে দিয়েছে ভক্ত-শ্রোতাদের হৃদয়ে। বরেণ্য এ শিল্পী দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। ১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ বাজারে আসে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। আর চলতি বছরে সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেছে কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীকে।
সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী আত্মা থেকে আহরিত গানকে করেছিলেন জীবনের ধ্রুবতারা। কথা ও সুরের সঙ্গে একাকার হয়ে মিশে যেতেন বেদনার প্রহরে প্রহরে। তার গান শুধু গান মাত্র ছিল না, ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া রাশি রাশি বেদনার পুঞ্জীভূত মেঘমালা। আধুনিক ও যান্ত্রিক জীবনে আত্মা ও মননের বেদনার কথা মানুষ যখন ভুলেই যাচ্ছিলেন, তখন তিনি গেয়েছিলেন মর্মবেদনার গান। আত্মার হাহাকার হয়ে উচ্চারণ করেছিলেন মানুষের প্রেম ও বিরহের অপরূপ কথামালা। বাংলা শিল্প রুচির সামগ্রিক অধঃপতন ঠেকাতে সংগীত হোক অনন্য অনুপ্রেরণা।
সুবীর নন্দীর দরদি ও দরাজ কণ্ঠে ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’র মতো বহু মর্মস্পর্শী গান শুধু স্মৃতি হিসেবে থাকবে। সুবীর নন্দীর গানের কলি হয়ে থাকবে আমাদের হৃদয়ের মাঝে। ‘উড়াল পঙ্খি’ ভক্তের মণিকোঠায় স্মৃতি হয়ে রয়ে গেলেন তিনি। গভীর শোক ও প্রাণান্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রিয় শিল্পী সুবীর নন্দী। 
শফিকুল ইসলাম খোকন
সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ে গবেষক
msi.khokonp@gmail.com
প্রকাশিতঃ দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ, ৯ মে ২০১৯, দৈনিক যুগান্তর তারিখঃ ৯ মে  ২০১৯

নদী মরলে দেশও মরবে

: শফিকুল ইসলাম খোকন : নদীমাতৃক দেশে নদীই আমাদের ভরসা। নদী আমাদের হৃৎপিণ্ড, নদী না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না, প্রকৃতি বাঁচবে না, পরিবেশের সুরক্ষা ...