সুবীর নন্দীর বিদায় : দিন শেষ হলো কথা রয়ে গেল!
দিন আসে, দিন যায়, কথা থেকে যায়। হয়তো সুবীর নন্দী ভেবেছিলেন তিনিও একদিন থাকবেন না, তার কথাগুলো রয়ে যাবে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করার সময় ‘দিন যায় কথা থাকে’ সিনেমায় গানটি গেয়েছিলেন সুবীর নন্দী। প্রায় পাঁচ দশক এভাবে প্রতিদিনই কেটে গেছে, গানের সুরে কথা গেঁথেছেন তিনি। ৬ মে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সুবীর নন্দী ইহলোকের মায়া ছেড়ে চলে গেছেন। এ দিনটির মধ্য দিয়ে ইহকালের দিন শেষ; কিন্তু রেখে গেছেন তার সুরের জালে গাঁথা সেসব ‘কথা’। গুণিজন বিদায়ের তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি নাম সুবীর নন্দী।
সব ধর্মের মানুষই বিশ্বাস করেন ‘জন্ম একবার মৃত্যুও একবার’। এরই ধারাবাহিকতায় প্রত্যেক প্রাণীকেই চিরায়ত ঘুমের সকাশে যাত্রা করতে হয়, এটা অবশ্যম্ভাবী। হাজার ডাকেও অনন্তরে পা রাখা সেই ঘুমকাতুরের জাগরণ হয় না। প্রেমাস্পদ জীবিত প্রাণের সঙ্গে অশেষ মাখামাখিতেও আর ঘুচে না বিচ্ছেদের বিয়োগ ব্যথা। শিল্পী সুবীর নন্দীর নিজের গান দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছিলেনÑ দিন যায়, কথা থাকে। মৃত্যুর মতো মানুষ ঘুমিয়ে পড়লে, ডাকাডাকিতেও সাড়া মিলবে না। তার দিন শেষ হয়ে গেছে; কিন্তু তার কথা আর অসংখ্য গান রয়ে গেছে। আমাদের হৃদয় বিদীর্ণ করে দিয়ে শিল্পী নিজেই উড়াল পঙ্খি হয়ে উড়াল দিয়ে চলে গেলেন। স্মরণের আলোয় যাকে আমরা ডেকে ফিরব; কিন্তু তিনি আর সাড়া দেবেন না। আর অশিক্ষিতের মতো বলবেন না ‘ও মাস্টার সাব আমি দস্তখত শিখতে চাই।’
উত্তর-পূর্ব বাংলার উড়াল পঙ্খির দেশের তিনি ছিলেন গানের একটি ‘ও আমার উড়াল পঙ্খি’। হিজলে তমালে ছাওয়া আদি অন্তহীন হাওরের বুক থেকে গান নিয়ে তিনি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সারা বাংলায়। জল ছলছল লিলুয়া বাতাসে ভেসে সেই অপরূপ গানে গানে স্পর্শ করেছিলেন সমগ্র বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাভাষী মানুষদের। মরমি গানের ‘ও আমার উড়াল পঙ্খি’ সুবীর নন্দী এখন চলে গেছেন অধরা জগতের দূর নীলিমায়। সুবীর নন্দী সবার মাঝে গান নিয়ে সবসময় উড়াল পঙ্খি ছিলেন; কিন্তু দূর নীলিমায় গিয়ে তার দুটি আঁখিও নীরব রয়েছে।
সুবীর নন্দীর মতো গায়ককে নিয়ে লেখা অনেক লেখকেরই যোগ্যতা আছে। কিন্তু আমার মনে হয়, আমার মতো লেখকের তাকে নিয়ে লেখা যোগ্যতা আছে বলে হয় না। তবে তাকে নিয়ে লেখাটা আমার সৌভাগ্যের ব্যাপার। তার গানগুলো আমাকে ভাবিয়ে তোলে। তার গানে আমি মুগ্ধ। তিনি মানুষকে গানের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন ইহকাল আর পরকাল। কলাজ্ঞ শ্রোতার শ্রবণ কুহরে বাংলা সংগীতের যে বর্ণিল তরঙ্গ ধ্বনি দিয়ে গেলেন সুবীর নন্দী, তার প্রাপ্তিতেই স্বস্তি ও আনন্দ খুঁজব আমরা। বাংলার আত্মা থেকে আহরিত গানকে করেছিলেন তিনি জীবনের ধ্রুবতারা। কথা ও সুরের সঙ্গে একাকার হয়ে মিশে যেতেন বেদনার প্রহরে প্রহরে। তার গান শুধু গান মাত্র ছিল না, ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া রাশি রাশি বেদনার পুঞ্জীভূত মেঘমালা। বাংলা গানের সহস্র বছরের সাধনায় সুবীর নন্দী প্রশান্তির বারি বর্ষণ করে যাক। আধুনিক ও যান্ত্রিক জীবনে আত্মা ও মননের বেদনার কথা মানুষ যখন ভুলেই যাচ্ছিলেন, তখন তিনি গেয়েছিলেন মর্মবেদনার গান। আত্মার হাহাকার হয়ে উচ্চারণ করেছিলেন মানুষের প্রেম ও বিরহের অপরূপ কথামালাÑ ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’।
সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব কেটেছে চা বাগানে। পরিণত বয়সে গানের পাশাপাশি চাকরি করেন ব্যাংকে। প্রাইমারিতে পড়ার সময় মা পুতুল রানীর কাছে সংগীতের হাতেখড়ির পর ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন সুবীর নন্দী। সিলেট বেতারে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে। রেডিওতে তার প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। ১৯৭৬ সালে আবদুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্লেব্যাকে আসেন সুবীর নন্দী। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমান ‘অশিক্ষিত’। সেই সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিন আর সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। ধীরে ধীরে তার কণ্ঠের রোমান্টিক আধুনিক গান ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘আশা ছিল মনে মনে’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়া’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘একটা ছিল সোনার কইন্যা’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খিরে’ গানগুলো সুবীর নন্দীকে পৌঁছে দিয়েছে ভক্ত-শ্রোতাদের হৃদয়ে। বরেণ্য এ শিল্পী দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। ১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ বাজারে আসে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। আর চলতি বছরে সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেছে কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীকে।
সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী আত্মা থেকে আহরিত গানকে করেছিলেন জীবনের ধ্রুবতারা। কথা ও সুরের সঙ্গে একাকার হয়ে মিশে যেতেন বেদনার প্রহরে প্রহরে। তার গান শুধু গান মাত্র ছিল না, ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া রাশি রাশি বেদনার পুঞ্জীভূত মেঘমালা। আধুনিক ও যান্ত্রিক জীবনে আত্মা ও মননের বেদনার কথা মানুষ যখন ভুলেই যাচ্ছিলেন, তখন তিনি গেয়েছিলেন মর্মবেদনার গান। আত্মার হাহাকার হয়ে উচ্চারণ করেছিলেন মানুষের প্রেম ও বিরহের অপরূপ কথামালা। বাংলা শিল্প রুচির সামগ্রিক অধঃপতন ঠেকাতে সংগীত হোক অনন্য অনুপ্রেরণা।
সুবীর নন্দীর দরদি ও দরাজ কণ্ঠে ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’র মতো বহু মর্মস্পর্শী গান শুধু স্মৃতি হিসেবে থাকবে। সুবীর নন্দীর গানের কলি হয়ে থাকবে আমাদের হৃদয়ের মাঝে। ‘উড়াল পঙ্খি’ ভক্তের মণিকোঠায় স্মৃতি হয়ে রয়ে গেলেন তিনি। গভীর শোক ও প্রাণান্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রিয় শিল্পী সুবীর নন্দী।
সব ধর্মের মানুষই বিশ্বাস করেন ‘জন্ম একবার মৃত্যুও একবার’। এরই ধারাবাহিকতায় প্রত্যেক প্রাণীকেই চিরায়ত ঘুমের সকাশে যাত্রা করতে হয়, এটা অবশ্যম্ভাবী। হাজার ডাকেও অনন্তরে পা রাখা সেই ঘুমকাতুরের জাগরণ হয় না। প্রেমাস্পদ জীবিত প্রাণের সঙ্গে অশেষ মাখামাখিতেও আর ঘুচে না বিচ্ছেদের বিয়োগ ব্যথা। শিল্পী সুবীর নন্দীর নিজের গান দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছিলেনÑ দিন যায়, কথা থাকে। মৃত্যুর মতো মানুষ ঘুমিয়ে পড়লে, ডাকাডাকিতেও সাড়া মিলবে না। তার দিন শেষ হয়ে গেছে; কিন্তু তার কথা আর অসংখ্য গান রয়ে গেছে। আমাদের হৃদয় বিদীর্ণ করে দিয়ে শিল্পী নিজেই উড়াল পঙ্খি হয়ে উড়াল দিয়ে চলে গেলেন। স্মরণের আলোয় যাকে আমরা ডেকে ফিরব; কিন্তু তিনি আর সাড়া দেবেন না। আর অশিক্ষিতের মতো বলবেন না ‘ও মাস্টার সাব আমি দস্তখত শিখতে চাই।’
উত্তর-পূর্ব বাংলার উড়াল পঙ্খির দেশের তিনি ছিলেন গানের একটি ‘ও আমার উড়াল পঙ্খি’। হিজলে তমালে ছাওয়া আদি অন্তহীন হাওরের বুক থেকে গান নিয়ে তিনি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সারা বাংলায়। জল ছলছল লিলুয়া বাতাসে ভেসে সেই অপরূপ গানে গানে স্পর্শ করেছিলেন সমগ্র বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাভাষী মানুষদের। মরমি গানের ‘ও আমার উড়াল পঙ্খি’ সুবীর নন্দী এখন চলে গেছেন অধরা জগতের দূর নীলিমায়। সুবীর নন্দী সবার মাঝে গান নিয়ে সবসময় উড়াল পঙ্খি ছিলেন; কিন্তু দূর নীলিমায় গিয়ে তার দুটি আঁখিও নীরব রয়েছে।
সুবীর নন্দীর মতো গায়ককে নিয়ে লেখা অনেক লেখকেরই যোগ্যতা আছে। কিন্তু আমার মনে হয়, আমার মতো লেখকের তাকে নিয়ে লেখা যোগ্যতা আছে বলে হয় না। তবে তাকে নিয়ে লেখাটা আমার সৌভাগ্যের ব্যাপার। তার গানগুলো আমাকে ভাবিয়ে তোলে। তার গানে আমি মুগ্ধ। তিনি মানুষকে গানের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন ইহকাল আর পরকাল। কলাজ্ঞ শ্রোতার শ্রবণ কুহরে বাংলা সংগীতের যে বর্ণিল তরঙ্গ ধ্বনি দিয়ে গেলেন সুবীর নন্দী, তার প্রাপ্তিতেই স্বস্তি ও আনন্দ খুঁজব আমরা। বাংলার আত্মা থেকে আহরিত গানকে করেছিলেন তিনি জীবনের ধ্রুবতারা। কথা ও সুরের সঙ্গে একাকার হয়ে মিশে যেতেন বেদনার প্রহরে প্রহরে। তার গান শুধু গান মাত্র ছিল না, ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া রাশি রাশি বেদনার পুঞ্জীভূত মেঘমালা। বাংলা গানের সহস্র বছরের সাধনায় সুবীর নন্দী প্রশান্তির বারি বর্ষণ করে যাক। আধুনিক ও যান্ত্রিক জীবনে আত্মা ও মননের বেদনার কথা মানুষ যখন ভুলেই যাচ্ছিলেন, তখন তিনি গেয়েছিলেন মর্মবেদনার গান। আত্মার হাহাকার হয়ে উচ্চারণ করেছিলেন মানুষের প্রেম ও বিরহের অপরূপ কথামালাÑ ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’।
সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব কেটেছে চা বাগানে। পরিণত বয়সে গানের পাশাপাশি চাকরি করেন ব্যাংকে। প্রাইমারিতে পড়ার সময় মা পুতুল রানীর কাছে সংগীতের হাতেখড়ির পর ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন সুবীর নন্দী। সিলেট বেতারে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে। রেডিওতে তার প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। ১৯৭৬ সালে আবদুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্লেব্যাকে আসেন সুবীর নন্দী। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমান ‘অশিক্ষিত’। সেই সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিন আর সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। ধীরে ধীরে তার কণ্ঠের রোমান্টিক আধুনিক গান ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘আশা ছিল মনে মনে’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়া’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘একটা ছিল সোনার কইন্যা’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খিরে’ গানগুলো সুবীর নন্দীকে পৌঁছে দিয়েছে ভক্ত-শ্রোতাদের হৃদয়ে। বরেণ্য এ শিল্পী দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। ১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ বাজারে আসে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। আর চলতি বছরে সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেছে কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীকে।
সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী আত্মা থেকে আহরিত গানকে করেছিলেন জীবনের ধ্রুবতারা। কথা ও সুরের সঙ্গে একাকার হয়ে মিশে যেতেন বেদনার প্রহরে প্রহরে। তার গান শুধু গান মাত্র ছিল না, ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া রাশি রাশি বেদনার পুঞ্জীভূত মেঘমালা। আধুনিক ও যান্ত্রিক জীবনে আত্মা ও মননের বেদনার কথা মানুষ যখন ভুলেই যাচ্ছিলেন, তখন তিনি গেয়েছিলেন মর্মবেদনার গান। আত্মার হাহাকার হয়ে উচ্চারণ করেছিলেন মানুষের প্রেম ও বিরহের অপরূপ কথামালা। বাংলা শিল্প রুচির সামগ্রিক অধঃপতন ঠেকাতে সংগীত হোক অনন্য অনুপ্রেরণা।
সুবীর নন্দীর দরদি ও দরাজ কণ্ঠে ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’র মতো বহু মর্মস্পর্শী গান শুধু স্মৃতি হিসেবে থাকবে। সুবীর নন্দীর গানের কলি হয়ে থাকবে আমাদের হৃদয়ের মাঝে। ‘উড়াল পঙ্খি’ ভক্তের মণিকোঠায় স্মৃতি হয়ে রয়ে গেলেন তিনি। গভীর শোক ও প্রাণান্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রিয় শিল্পী সুবীর নন্দী।
শফিকুল ইসলাম খোকন
সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ে গবেষক
msi.khokonp@gmail.com
সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার বিষয়ে গবেষক
msi.khokonp@gmail.com
প্রকাশিতঃ দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ, ৯ মে ২০১৯, দৈনিক যুগান্তর তারিখঃ ৯ মে ২০১৯
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন